স্বাগতম সানওয়ে স্কুল এ্যান্ড কলেজ

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

Date: September 9, 2023

ঢাকা শহরের যানজটের ভোগান্তি কমাতে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হচ্ছে। ১৯.৭৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই প্রকল্পটি হাতে নেওয়ার প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় পর বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১১.৫ কিলোমিটার উদ্বোধন করা হচ্ছে।

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশে চলাচল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর আগামীকাল রবিবার সকাল ৬টা থেকে সাধারণ যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহন ওঠানামা করার নির্ধারিত স্থান আছে। টোল প্লাজা ছাড়া চার লেনের এই এক্সপ্রেসওয়েতে কোথাও যানবাহন থামানো যাবে না।

পুরো এক্সপ্রেসওয়েটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কাওলা থেকে রেললাইন ধরে তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর হয়ে যাত্রাবাড়ীর কাছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে গিয়ে শেষ হবে।

কিলোমিটারে খরচ ১৯১ কোটি টাকা

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের চুক্তি সই হয়।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের দক্ষিণে কাওলা থেকে শুরু করে মগবাজার হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়।

এক্সপ্রেসওয়েতে উঠা-নামার জন্য মোট ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩১টি র‍্যাম্প রয়েছে। এই র‍্যাম্পসহ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৭ কিলোমিটার।

প্রকল্পটিতে মোট ব্যয় হয়েছে ৮,৯৪০ কোটি টাকা। সে হিসেবে এই এক্সপ্রেসওয়ের প্রতি কিলোমিটার নির্মাণে খরচ হয়েছে ১৯১ কোটি টাকারও বেশি।

টোল নির্ধারণ, বাস ভাড়ার সিদ্ধান্ত হয়নি

এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলে ইতোমধ্যে বিভিন্ন যানের জন্য আলাদা করে টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এই টোল অনুযায়ী এ পথে চলাচলকারী বাসের ভাড়া কী হবে তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। লোকাল বাসগুলো কী নিয়মে চলাচল করবে এ নিয়েও সংশ্লিষ্টদের ঘোর কাটছে না।

এক্সপ্রেসওয়ের এই অংশে যানবাহনকে চার শ্রেণিতে ভাগ করে টোল ঠিক করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। এতে সর্বনিম্ন টোল ৮০ ও সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

গত ২১ আগস্ট মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের উপসচিব আবুল হাসানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফার্মগেট পর্যন্ত সব ধরনের বাসের (১৬ সিট বা এর বেশি) ক্ষেত্রে ১৬০ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে এসব বাসে নতুন ভাড়া কত হবে তা জানেন না মালিকরা। বর্তমানে এই দূরত্বের যাত্রী ভাড়া জনপ্রতি ৩০ টাকা।

এ বিষয়ে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আজমল উদ্দিন আহমেদ (সবুর) অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “এক্সপ্রেসওয়ের টোলহার সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এটি সমন্বয় করে বাসের ভাড়া নেওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে টোল অনুযায়ী যাত্রীভাড়া বাড়বে। তবে এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এক্সপ্রেসওয়েটি চালু হওয়ার পর অটোমেটিক ভাড়াও বাড়বে।”

বাকি অংশ চালু আগামী বছরের জুনে

এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১১.৫ কিলোমিটার উদ্বোধন করা হচ্ছে আজ। তেজগাঁও থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত বাকি অংশ আগামী বছরের জুনে চালু করার লক্ষ্য ঠিক করছে সরকার।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এএইচএম সাখাওয়াত আখতার প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে বলেন, “কাওলা থেকে বনানী পর্যন্ত অংশটির কাজ আমরা শেষ করেছি। বনানী পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ের সব অবকাঠামো প্রস্তুত হয়েছে। অন্যদিকে বনানী থেকে মগবাজার অংশের কাজ ৪৯.৫% হয়েছে। আর মগবাজার থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত অংশের অগ্রগতি ৫%। সে হিসেবে পুরো প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৬০.৫%। আশা করছি আগামী জুনের মধ্যেই আমরা শতভাগ কাজ শেষ করতে পারবো।”

গতকাল শুক্রবার সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ পুরোপুরি শেষ না হলেও এখন পর্যন্ত ৬৫% কাজ সম্পন্ন হয়েছে। যেদিকে উদ্বোধন হচ্ছে না সেদিকেও অনেক কাজ শেষ হয়েছে। আমরা আশা করছি আগামী বছর নাগাদ পুরো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু করতে পারবো।”

কাজের দায়িত্বে যারা, সরকারের মালিকানায় কবে

সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউন জানায়, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) পদ্ধতিতে প্রকল্পটিতে বিনিয়োগ করছে থাইল্যান্ডভিত্তিক কনগ্লোমারেট প্রতিষ্ঠান ইতাল-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড, চীনের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান শ্যানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ ও সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন।

প্রকল্পে ইতাল-থাইয়ের শেয়ার ৫১%, শ্যানডংয়ের ৩৪%, আর সিনোহাইড্রোর শেয়ার ১৫%।

এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণ, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গঠন করা হয়েছে “ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে” নামের একটি বেসরকারি কোম্পানি।

চুক্তি অনুযায়ী, এ এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাল সাড়ে তিন বছর। নির্মাণ-পরবর্তী সাড়ে ২১ বছর টোল আদায় করবে “ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে”। বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের শেয়ার অনুযায়ী লভ্যাংশ পাবে। চুক্তিবদ্ধ সময় শেষ হলে এক্সপ্রেসওয়েটি চলে আসবে বাংলাদেশ সরকারের মালিকানায়।

One response to “ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে”

  1. Hi, this is a comment.
    To get started with moderating, editing, and deleting comments, please visit the Comments screen in the dashboard.
    Commenter avatars come from Gravatar.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© Developed by Mostofa Shakran

কারিগরি সহায়তা: